সেকুলারতাঃ পক্ষে, বিপক্ষে না অন্যপক্ষে

ধর্মনিরপেক্ষতা/সেকুলারতা, ভিন্নধর্ম-রুচির অধিকার আমাদের কাছে এখন বেশ চর্চার বিষয়, চিন্তারও বটে। ভারতবর্ষের ধর্মনিরপেক্ষতা নিয়ে প্রশ্ন উঠছে। চারপাশে ঘটনাক্রম খেয়াল করলে তা আন্দাজ করা যায়। আলোচনা, তর্ক, তরজা চলছে, কিছুটা পারস্পরিক দোষারোপও হচ্ছে। সঙ্গে চলছে খুন-দাঙ্গা আর হুমকি। আপাতত তা আমাদের আলোচ্য নয়। সেকুলারদের মধ্যেও ‘নিরপেক্ষতা’ নিয়ে তর্ক আছে। এই নিয়ে বলার আগে সুযোগ বুঝে পন্ডিতি ফলিয়ে নেওয়া যাক। সকলের জানা তবু আরেক বার বলা যাক। কে ধর্মনিরপেক্ষ/সেকুলার? কয়েকটা উদাহরণ দিয়ে বোঝার চেষ্টা করব।

এক. ধরা যাক একজন ব্যক্তি কোনো একটি বিশেষ ধর্মে বিশ্বাসী। স্বাভাবিক ভাবেই সেই ধর্মকে পৃথিবীর শ্রেষ্ঠ ধর্ম বলে মনে করেন। কিন্তু অন্যান্য ধর্মের অস্তিত্ব স্বীকার করে নিতে রাজি আছেন। ব্যক্তিজীবনে ও রাষ্ট্রজীবনে তিনি অপরাপর ধর্মের প্রতি সহনশীল। তিনি কি ধর্মনিরপেক্ষ?

দুই. কোনো একজন ব্যক্তি বিশেষ ধর্মে বিশ্বাসী, এটাই তার কাছে শ্রেষ্ঠ ধর্ম। তিনি এটাও মনে করেন অন্য ধর্মের মধ্যে কিছু সত্য নিহিত আছে। যদিও তা তার ধর্মের চেয়ে হীনতর। সেই ধর্মও মানুষকে মুক্তি দিতে পারে। এই ব্যক্তি কি ধর্মনিরপেক্ষ?

তিন. কোনো একজন কোনো ধর্মে বিশ্বাসী নন। ঈশ্বরের অস্তিত্বকে খারিজ করেন। সে কারণে কোনো ধর্মেই তার আস্থা নেই। তিনি মনে করেন ধর্মে বিশ্বাস না রাখার অধিকার আছে। ইনি কি ধর্মনিরপেক্ষ?

বস্তুত, ‘নিরপেক্ষতা’ কোনো কিছুর সাপেক্ষ নয় বা কিছুর মুখাপেক্ষী নয়। যার সঙ্গে কোনো দুই বা ততোধিক বিষয়/ঘটনা/পক্ষ সম্পর্কহীন বা সমন্ধহীন তা একমাত্র নিরপেক্ষ। তাহলে প্রথম ও দ্বিতীয় ব্যক্তি ঠিক নিরপেক্ষ নন; সহনশীল, সহিষ্ণু। কেউ বেশি কেউ বা একটু কম। তৃতীয় ব্যক্তিকে নিরপেক্ষ বলা যেতে পারে। কেউ হয়তো এই প্রশ্ন তুলতে পারেন ধর্মহীনতা একঅর্থে ধর্ম। ঠিকই, ‘ধারণ করা’/বৈশিষ্ট্য অর্থে তার ধর্ম আছে। ‘রিলিজিয়ন’ অর্থে নেই। সেকুলারিজমের বাংলা প্রতিশব্দ করা হয়ে ধর্মনিরপেক্ষতা। যার মানে করা হয় পরধর্মসহিষ্ণুতা। ছোটোবেলায় ইতিহাস বইতে এই নিয়ে পড়েছি। জেনেছি অশোক, আকবরের নাম যারা কিনা পরধর্মসহিষ্ণু অর্থাৎ ধর্মনিরপেক্ষ। বিশেষ ধর্মে বিশ্বাস নিয়ে নিরপেক্ষতা কার্যত অসম্ভব, খোদ ঈশ্বরের পক্ষেও অসম্ভব। নিরপেক্ষ যদি হতেই হয় তবে ধর্মহীন বা ধর্মসম্পর্কহীন বা ধর্মসংস্রবহীন হওয়া জরুরি। ফলত ধর্মনিরপেক্ষতা শব্দটা দিয়ে সেকুলারিজমকে ব্যাখ্যা করা অসুবিধাজনক। সেকুলারিজমের বাংলা হতে পারে ধর্মহীন বা ধর্মসম্পর্কহীন। এমনকি সব ধর্মকে সমান ভাবে উৎসাহিত করার নীতিও ধর্মনিরপেক্ষতা/সেকুলারতা নয়। কোন রাষ্ট্রকে ধর্মনিরপেক্ষ বলা চলে? যে রাষ্ট্র বিশেষ কোনো ধর্মকে রাষ্ট্রধর্ম হিসেবে স্বীকৃতি দেয় না এবং যে রাষ্ট্রের নীতি প্রণয়নে বিশেষ কোনোধর্মের প্রভাব নেই। প্রথম শর্তটার ভিত্তিতে ভারত ধর্মনিরপেক্ষ দেশ, ঠিকই, কিন্তু দ্বিতীয়টা ভারতের ধর্মনিরপেক্ষতা নিয়ে প্রশ্ন তুলে দেয় বৈকি। এই নিয়ে অন্যত্র আলোচনা হতেই পারে, আপাতত উল্লেখ করলাম মাত্র। সেকুলারতা/ধর্মনিরপেক্ষতা তাহলে কী? তা মানবজীবন, সমাজ, জগৎ সম্পর্কে একটি বিশেষ দৃষ্টিভঙ্গি যা ধর্মবিমুখ এবং ইহজগৎমুখী। ‘রিলিজিয়াস’ শব্দটার বিপরীত অর্থে যা ব্যবহৃত হয়। যার সঙ্গে যুক্তিবাদ, বিজ্ঞানমনস্কতার আত্মিক সম্পর্ক আছে।

সেকিউলার/ ধর্মনিরপেক্ষদের সম্পর্কে ভারতবর্ষে সম্প্রতি দুটো অভিযোগ সামনে আসছে। এক, সেকিউলার/ধর্মনিরপেক্ষদের মৌলবাদের সমালোচনা একপেশে বা একটেরে। তাঁরা হিন্দু মৌলবাদের সমালোচনায় যতটা তৎপর মুসলিম মৌলবাদের সমালোচনায় ততটা নন। কিংবা বলা ভালো নিশ্চুপ। দুই, সেকিউলার/ধর্মনিরপেক্ষরা নিরপেক্ষতার নাম করে কার্যত একটা বিশেষ ধর্মের (ইসলাম) তোষণ করে চলেছেন। বলা বাহুল্য দেশ, কাল বদলে গেলে এই অভিযোগগুলো একই থাকে, ধর্মের নামগুলো কেবল বদলে বদলে যায়। সেকিউলার সম্পর্কে এ এক চিরন্তন অভিযোগ। দুটো অভিযোগের মধ্যে সম্পর্ক যে নেই তা নিশ্চিত করে বলাও যায় না। হিন্দু মৌলবাদ, ইসলাম মৌলবাদ প্রবণতাগত ভাবে একই। উভয় ধর্ম, সম্প্রদায় এটা বোঝাতে তৎপর যে তাদের ধর্মই শ্রেষ্ঠ। জাতপাত, বর্ণকৌলিন্যগত ক্ষেত্রেও একই প্রবণতা চোখে পড়বে। ফলত, যিনি উভয় প্রকার ধর্ম এবং জাতপাত-বর্ণ, জাতিগত মৌলবাদের সমালোচক তাঁর অবস্থা মিছরির ছুরির মতো। একপক্ষের সমালোচনা করলে অন্যেরও সমালোচনা করতে হয়। না হলে তিনি ধর্মনিরপেক্ষতা/ সেকিউলারতার পরীক্ষায় উর্ত্তীণ হবেন কীভাবে? শেষে দাঁড়াচ্ছে এই যে, হিন্দু মৌলবাদের সমালোচনার প্রাক বা উত্তর শর্ত ইসলাম মৌলবাদের সমালোচনা করা। আমাদের মনে হয়, বিশেষ কোনো ধর্ম বা জাতি বা সম্প্রদায়গত মৌলবাদ বলার অপেক্ষায় সংখ্যাগুরু ও সংখ্যালঘু মৌলবাদ বললে সমস্যাটাকে বোঝা ও মোকাবিলা করা সহজতর হবে। কারণ এই যে, দেশ- কাল বদলে গেলে কেবল প্রেক্ষিতগুলো বদলে যায় সমস্যাটা কিন্তু একই থাকে।

মূল অভিযোগ সম্পর্কে কথা বলার আগে নিরপেক্ষতা নিয়ে অবস্থানটা একটু স্পষ্ট করে নেওয়া যেতে পারে। নিরপেক্ষতা বলতে কী বোঝায়? নিরপেক্ষতা মানে কী? নিরপেক্ষ যে কোনো কিছুর মুখাপেক্ষী নয়, যে কিনা স্বাধীন, পক্ষপাতহীন, সম্পর্কহীন, সম্বন্ধাতীত। নিরপেক্ষ-র বিপরীত হিসাবে আমরা সাপেক্ষ শব্দটা ব্যবহার করে থাকি। অর্থাৎ নিরপেক্ষ কিছুর সাপেক্ষতা করে না। আভিধানিক অর্থ থেকে এটা স্পষ্ট, যিনি নিরপেক্ষ, যিনি দুই বা ততোধিক পক্ষ/ঘটনা/ব্যক্তি/বস্তু-র মধ্যে তুলনা করছেন সেগুলো সঙ্গে সম্বন্ধহীন। তাহলে একথা বলা যায়, তিনি সকলকেই সমান চোখে দেখবেন। কারুর প্রতি কোনো পক্ষপাত করবেন না। সমভাবে বিচার করার অর্থ কী এই যে উভয় পক্ষকে একটাই দৃষ্টিকোণ থেকে দেখা, একটাই দৃষ্টিভঙ্গি দিয়ে ব্যাখ্যা করা এবং একরকমের সমাধান দেওয়া? নাকি উভয় পক্ষের অবস্থানের(জাতি, ধর্ম, বর্ণ, সম্প্রদায়, ইতিহাস, সংস্কৃতি ইত্যাদি) নিরিখে ভিন্ন দৃষ্টিভঙ্গি দিয়ে বিচার করা? যে বিচার আপাত ভাবে ভিন্ন দেখাতে পারে। কথা গুলো একটু জটিল শোনাচ্ছে। এ কেমন বিচার যা আপাত ভাবে ভিন্ন, কিন্তু আদতে অভিন্ন। খালি চোখে বোঝা যাচ্ছে আলাদা তা কী করে এক হতে পারে? হতে পারে।

বক্তব্যটা খোলসা করার জন্য একটা উদাহরণের শরনাপন্ন হব।

ধরা যাক, আপনার বাড়ির সামনের রাস্তাটা খানাখন্দে ভরা, প্রচুর গর্ত। চলাচলের পক্ষে অনুপযোগী। কোথাও এক ফুট গর্ত, কোথাও আধ ফুট, কোথাও বা দু’ ফুট। এখনই সারাই করা দরকার। আপনি যদি সব জায়গায় একই পরিমাণ মাটি ফেলেন তাহলে কি রাস্তাটা চলাচলের উপযুক্ত হবে? নাকি যেখানে যতটা মাটি ফেলা দরকার সেখানে ততটা মাটি দেবেন। প্রথম ক্ষেত্রে, আপনি ‘পক্ষপাতহীন’ হয়ে সমস্ত গর্তে সম পরিমাণ মাটি দিলেন, কিন্তু রাস্তা অসমান রয়ে গেল। দ্বিতীয় ক্ষেত্রে, আপনি ‘পক্ষপাত দুষ্ট’ হয়ে প্রতিটি গর্তে প্রয়োজন মত মাটি দিলেন। রাস্তা চলাচলের উপযোগী হল। স্বাভাবিক আপনি দ্বিতীয় পন্থাটাই নেবেন। কিন্তু একটা প্রশ্ন উঠতেই পারে, কোনটা এক ফুট, কোনটা দু’ ফুট বুঝবো কী ভাবে? সমস্যা রাস্তা নিয়ে হলে চিন্তা ছিল না। ধর্ম, জাতি, বর্ণ, খাদ্যাভাসগত সমস্যা নির্ণয়ের ক্ষেত্রে নির্ণীত কোনো স্কেল আছে? উপায় আছে? যদি সমস্যাটা সংখ্যাগুরু ও সংখ্যালঘু-র প্রেক্ষিত থেকে দেখি তাহলে হয়তো নির্ণয় করা যেতে পারে। প্রসঙ্গত, আর একটা কথা বলে নেওয়া দরকার যে, এক অর্থে ‘নিরপেক্ষতা’ ও কারুর সাপেক্ষতা করে। নির্দিষ্ট কোনো ধর্ম/জাতি/সম্প্রদায়ের নয়। তা ইতিহাসের, যুক্তির এবং context(অনুসঙ্গ)-এর। বলা বাহুল্য, এই শর্ত গুলোকে বাদ রেখে কোনো কিছুর আলোচনা করা কার্যত অসম্ভব। নচেৎ; বহুত্ববাদ, বহুস্বরকে ভুল পড়া ও বোঝার সম্ভাবনা তৈরি হতে পারে।

আমরা নিশ্চিত করে বলতে পারি এদেশে সব ধর্মের মানুষ সমানভাবে বেঁচে আছে। যে দেশের ভাবী প্রধানমন্ত্রী ভোট প্রচারে কিছু মানুষকে সীমান্তের ওপারে পাঠিয়ে দেওয়ার হুমকি দিতে পারেন, যে দেশে কিছু প্রভাবশালী ব্যক্তি একটি বিশেষ ধর্ম গ্রন্থকে ‘জাতীয় গ্রন্থ’ করার নিদান দেন, সেই দেশ সেকুলার কিনা পরের কথা। এই কান্ডগুলো ক্রমাগত চলতে থাকলে সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের কাছে বেঁচে থাকার জন্য দু’টো রাস্তা থাকে- এক, দ্বিতীয় শ্রেণির নাগরিকের জীবন কাটাও। অথবা দুই, মৌলবাদের হাত ধরো। কারণ রাষ্ট্র আমাকে ধর্মাচরণের অধিকার দিচ্ছে না, বরং যেটুকু আছে কেড়ে নিচ্ছে। আমাদের সকলের মনে থাকার কথা ফিরাক(২০০৯) ছবিটা। একটা দৃশ্যের কথা মনে করতে চাই। দাঙ্গা বিদ্ধস্ত গুজরাট। এক মুসলমান যুবক ও তার প্রেমিকা তাদেরই ব্যবসা পার্টনারের বাড়িতে আশ্রয় নেয়। হঠাৎ দরজায় ‘নক’-এর শব্দ, লক্ষ্ণীনারায়ণের মন্দির তৈরির জন্য চাঁদা চাইতে এসেছে দুজন। মুসলমান যুবকই চাঁদা দেয়,আর নাম জিজ্ঞেস করলে বলে- সমীর, সমীর দেশাই। কেন বদলালো নামটা? দাঙ্গার জন্য। ঠিকই,ঘরের ভিতরে সমীর শেখকে তার বন্ধুর স্ত্রী জিজ্ঞাসা করে ‘সমীর’ কি কোনো মুসলমানের নাম হতে পারে? চমৎকার, নামের(শব্দ ভান্ডার) ও কি সহজে ধর্মীয় মেরুকরণ হয়ে যায় না? সমীর শব্দের আরবী অর্থ আছে তা জানার প্রয়োজনও বোধ করি না। মুম্বাই মেরি জান (২০০৮) ছবি ওই যুবকটা, যে মুসলমান হয়েও লোকনাথবাবার ছবি বয়ে নিয়ে চলে। কেন? পারজানিয়া ছবির ছোট্ট পারজান, আসলে পার্সি, যে স্বপ্ন দেখতো ভারতের হয়ে ক্রিকেট খেলার- সে খুন হয়ে গেল আরবী নামের জন্য। কেন একজন সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের মানুষ পাড়া্র এক কোনে থাকতে বাধ্য হন? কিংবা পাড়ার মধ্যেও পাড়া ছাড়া হয়ে বাস করেন? কিংবা আহমেদ নামধারী একজন ছোট্ট বাচ্ছাকে তারই বন্ধুরা পাকিস্থানে চলে যাওয়ার প্রস্তাব দেয় কেন? এর জবাব হয়তো এমনটা হতে পারে- আমাদের কোনো সমস্যা নেই, সেইতো মিশতে পারে না। ধরা যাক সে চায় না আমাদের সঙ্গে মিশতে, এটা কি ভেবে দেখার প্রয়োজন বোধ করেছি কেন সে চায় না? শুধু আমাদের দেশ নয়; আমাদের প্রতিদিনের বলা শব্দ, বাক্য- এমনকি ভাবনাগুলোও কেমন ধর্মীয় আকার নিয়ে নিচ্ছে না? বস্তুত, এদেশে সংখ্যালঘু ও সংখ্যাগুরু হয়ে বেঁচে বর্তে থাকার তফাৎটা না বুঝে, শুধুই মৌলবাদের সমালোচনা করা কার্যত সংখ্যাগুরুকে শক্তিশালী করার সম্ভাবনা তৈরি করে দেয় নাকি?

উপরে এতো কথা বলার অর্থ এই নয়, সংখ্যালঘুর মৌলবাদ সম্পর্কে নিশ্চুপ থাকার সাফাই গাওয়া। এটা ঠিক যে, মৌলবাদী প্রবণতাগুলো পরস্পর পরস্পরকে পুষ্ট করে, শক্তিশালী করে। এটাতো সাধারণ বিজ্ঞানের নিয়ম। প্রশ্ন হলো, কে কাকে কেমন করে পুষ্ট করে? পুষ্ট করার মাত্রা, ধরনধারণ, ভঙ্গি কি একই রকমের? উভয়েই, প্রবণতাগত ভাবে এক হলেও তাদের ভিন্ন প্রেক্ষিত সম্পর্কে কিছুটা বাড়তি সজাগ থাকার চেষ্টা আর কি। আমরা সেকিউলার মানুষ হিসেবে উভয় মৌলবাদের সমালোচনা করব এটাই কাঙ্ক্ষিত। কিন্তু সংখ্যালঘু মৌলবাদের সমালোচনা যেন সংখ্যালঘু বিদ্বেষকে শক্তিশালী করে না ফেলে, এটুকুই বলার।

এই সময় হঠাৎ করে, এতো কথা বলার, তর্ক করার দরকার পড়ল কেন? কয়েকটা অসহিষ্ণু ঘটনা, খুন আর বিশেষ ধর্মীয় হুমকির জন্য? নাকি আমাদের ভিন্ন রুচির অধিকার, বহুত্ব, বহুস্বর আক্রান্ত বলে? উত্তর দেবার প্রয়োজন নেই, পাঠক জানেন। আমরা তো বহুত্ব লালন করার কথা বলি। চাই ভিন্ন ধর্ম/সংস্কৃতি অপর ধর্ম/সংস্কৃতিকে পরিসর দিয়ে স্বতন্ত্র ভাবে বাঁচুক। গণতান্ত্রিক রীতিতে এটাই কাঙ্ক্ষিত। যাদের(পড়ুন ধর্মীয় ও সাংস্কৃতিক মৌলবাদ) গড়ে ওঠার ও বিকাশের ইতিহাস আলাদা, যারা কিনা প্রবনতাগত ভাবে এক, তাদের একই ছাঁচে, খোপে, পদ্ধতিতে বিচার করা সম্ভব? এবং সঙ্গত? যখন আমরা সকলে জানি যে, ধর্মীয় মৌলবাদের সঙ্গে ধর্ম রাজনীতি ও পুঁজির সখ্যতা বেশ গভীর! কোনো নির্দিষ্ট উত্তর দেবার, সমাধান দেবার বা পথ বাৎলানোর স্পর্ধা ও সাধ্য কোনোটা আমার নেই। যোগ্য ব্যক্তি তা করবেন, সে আশা এখনও রাখি। কেবলই; ধর্মীয় মৌলবাদকে অন্য ভাবে দেখার, বোঝার প্রস্তাব করছি; মাত্র। আসুন তর্ক করি-প্রশ্ন করি পরস্পরকে, প্রয়োজনে কিঞ্চিৎ ঝগড়াও করা যেতে পারে। আর একবার যাচাই করে নেওয়া যাক নিজেদের অবস্থানকে।


লেখাটি লিখেছেন অনল পাল।

This entry was posted in Uncategorized. Bookmark the permalink.

1 Responses to সেকুলারতাঃ পক্ষে, বিপক্ষে না অন্যপক্ষে

  1. Hasnara Khatun বলেছেন:

    ধর্মীয় বিশ্বাস-অবিশ্বাস, সহিষ্ণুতা-অসহিষ্ণুতার জটিল পরতস্থিতিতে এ রকম একটা বিশ্লেষণ দরকার ছিল। অনলকে ধন্যবাদ এবং অভিনন্দন।

    Liked by 1 person

এখানে আপনার মন্তব্য রেখে যান